মুখ‍্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও বালি মাফিয়াদের দাপট অব‍্যাহত : চলছে অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়ি অবাধে

12th October 2020 10:21 pm বর্ধমান
মুখ‍্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও বালি মাফিয়াদের দাপট অব‍্যাহত : চলছে অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়ি অবাধে


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান  ) :  বালির অবৈধ কারবার বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ প্রশাসনকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । কিন্তু তার পরেও প্রশাসন বালির অবৈধ  কারবার বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁষছেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের  কোড়া গ্রামের বাসিন্দারা।বাঁধের রাস্তা দিয়ে দিনে ও রাতে বেপরোয়া গতীতে ওভারলোড  বালির ট্রাক ও লরি যাতায়াত বন্ধের দাবিতে তারা সরব হয়েছে ।গ্রামবাসীদের অভিযোগ রাস্তা বাঁচাতে ও দুর্ঘটনায় প্রাণহানী রুখতে তারা পথে নেমে ওভারলোড বালির লরি আটকালেও পুলিশের সহযোগীতা মিলছে না ।   উল্টে ওভারলোড বালির লরি ছেড়ে দেওয়ারা জন্য পুলিশ গ্রামবাসীদের বাধ্য করছে । এই পরিস্থিতিতে গণস্বাক্ষর সংবলিত অভিযোগ পত্র মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোড়া গ্রামের বাসিন্দারা । জামালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম কোড়া । এই অঞ্চলের মুইদিপুর থেকে কোড়া এলাকা পর্যন্ত দামোদরের  বাঁধের দুই পাশ অত্যন্ত জনবহুল । নদি বাঁধের উপরেই তৈরি হয়েছে পাকা পিচ রাস্তা ।মুইদিপুর থেকে কোড়া পর্যন্ত  বাঁধের রাস্তার দুই ধারে বেশ কয়েকটি স্কুল ও শিশুশিক্ষা কন্দ্র রয়েছে । বাঁধের রাস্তা ধরে কানারিয়া সেতু কিংবা চাপাডাঙ্গা সেতু পেরিয়ে বালি বোঝাই ট্রাক ও লরি হগলী হয়ে কলকাতা পৌছায় ।নদি বাঁধের এই রাস্তা দিয়ে এখন বোপরোয়া গতীতে ওভারলোড বালি বোঝাই ট্রাক ও লরির যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় কোড়া  গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষোভ মাত্রা ছাড়িয়েছে । কোড়া গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন , “সিন্ডিকেটের লোকজন মুইদিপুর সংলগ্ন এলাকায় বালি খাদান চালু করেছে ।পুলিশ ও শাসক দলের লোকজনের মদতে সিন্ডিকেটের লোকজন সেই খাদান চালাচ্ছে । ওই খাদান থেকে ওভারলোড বালি নিয়ে প্রতিদিন শয়ে শয়ে ট্রাক ও লরি নদি বাঁধের রাস্তায় উঠে  চাঁঁপাডাঙ্গা হয়ে কলকাতা চলে যাচ্ছে । বিশ্বজিৎ আরও বলেন ,ওই সব বালির লরিতে থাকা  চালানেও রয়েছে অসঙ্গতি ।রায়না ২ ব্লকের নরসিংহপুর মৌজার খাদানের চালান  ব্যবহার করে জামালপুরের মুইদিপুরের খাদান  থেকে চলছে বালি পাচার ।গ্রামবাসীরা পথে নেমে রবিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এমন একাধীক ওভার লোড বালির লরি আটকে রাখে । সোমবারও প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে  । বালি লরি আটকানোর  খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে আসে । কিন্তু লরি গুলিতে ওভারলোড বালি থাকা সত্তেও আইনানুগ কোন ব্যবস্থা তারা নেন না । উল্টো ওভারলোড বালির লরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ চাপ সৃষ্টি করে ।” গ্রামের অপর বাসিন্দারা বলেন ,“বিগত কয়েকদিন ধরে নদি বাঁধের রাস্তার উপর দিয়ে ওভারলোড বালির চাপ অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে । বেপরোয়া ভাবে ওই বালির লরি গুলি যাতায়াত করছে । কয়েকদিন আগে এলাকার একজন বালির লরির ধাক্কায় জখম হন । ওভার লোড বালির লরির দাপটে নদি বাঁধের রাস্তা দিয়ে  সাধারণের যাতায়াত দুরহ হয়ে উঠেছে ।গ্রামবাসীরা বলেন , তারা প্রশাসনের উপরে আস্থা রাখতে পারছেন না । তাই চিঠি লিখে সবিস্তার  মুখ্যমন্ত্রী কে জানাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । ” যদিও গ্রামবাসীদের তোলা অভিযোগ মানতে চাননি জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চল তৃণমূলের যুব নেতা 
রফিকুল ইসলাম । তিনি দাবি করেন ,“ শাসক দলের মদতে মুইদিপুরে বালি খাদান চলছে বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা । খাদান বৈধ ভাবে চলছে না অবৈধ বাবে চলছে সেটা প্রশাসনের দেখার বিষয়।   রফিকুলের দাবি তাদের এলাকার  গ্রামবাসীরা সারাজীবনই এমন উল্টোপাল্টা বকে । ওদের মাথার ঠিকনেই । তাই এইসব মিথ্যা অভিযোগ তুলছে । ” জামালপুর থানার পুলিশের এক কর্তা  বলেন ,কোড়া এলাকার লোকজন দুর্গা পুজোর চাঁদার জন্য লরি আটকে ছিল ।পুলিশ গিয়ে লরি গুলিকে ছেড়ে দেওয়া করিয়েছে । গ্রামবাসীদের বলা  হয়েছে ওই এলাকার রাস্তা দিয়ে ওভারলোড বালির লরি যাতায়াত বাড়লে ব্লকের বিএল আ্যান্ড এলআরওকে জানাতে । জামালপুর ব্লকের বিএল অ্যান্ড এলআরও পার্থ ঘোষ বলেন ,“নরসিংহপুর মৌজার চালান নিয়ে কোথায় কি খাদান চলছে সেই ব্যাপারে রায়না ২ ব্লকের বিএল অ্যান্ড এলআরও ভালো বলতে পারবেন । একই সঙ্গে তিনি বলেন জামালপুরের কোড়া গ্রামের বাঁধের রাস্তা দিয়ে  ওভারলোড বালির গাড়ি চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । ”





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।